নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ভূরঘাটায় বাসের ছাদে ব্যারেলের (ড্রাম) মধ্যে পাওয়া অজ্ঞাত পরিচয় মৃত নারীর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এদিকে পুলিশের ধারণা, ওই নারী আর্থিক লেনদেনের কারণে খুন হতে পারেন। শুক্রবার (২০ নভেম্বর) দিনগত রাতে ওই নারী মরদেহ উদ্ধারের পর শনিবার (২১ নভেম্বর) দিনভর চেষ্টার পর মৃত নারীর পরিচয় ও হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গৌরনদী থানা পুলিশ। মৃত নারীর নাম সাবিনা ইয়াসমিন (৩৪), তিনি গৌরনদী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াসুর এলাকার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শহিদুল ইসলাম শফিকুল স্ত্রী এবং পাশ্ববর্তী মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর এলাকার সাহেব আলীর মেয়ে। নিহত সাবিনা দিয়াসুর এলাকার বাসা ভাড়া দিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বাসবাস করতেন। এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের দেবর ও প্রবাসী শহিদুল ইসলামের ছোট ভাই মনির হাওলাদার জানান, তার ভাই-ভাবীর মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার জন্য গৌরনদীর মাহিলাড়া এলাকার খালেক হাওলাদার বেশ কিছুদিন আগে ৪ লাখ টাকা দেয়। বিলম্ব হওয়ায় খালেক বিদেশে যেতে অসম্মতি জানালে সাবিনা সম্প্রতি তাকে (খালেক) দেড় লাখ টাকা ফেরত দেয়। তিনি জানান, গত শুক্রবার সকালে দুই সন্তান নিয়ে গৌরনদীর দিয়াসুরের বাড়ি আসেন তার ভাবী। সকাল ১০টার দিকে খালেক হাওলাদার ডাকছে বলে বরিশাল যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন সাবিনা।
সারাদিনেও তিনি বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। ওই রাতে ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে একটি বাসের ছাদে ব্যারেলের মধ্য থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে সাবিনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তার আঙুলের ছাপ মিলিয়ে সাবিনার পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাবিনার মোবাইল ফোনের সূত্রে ধরে জানা গেছে, শুক্রবার তিনি বরিশাল শহরে গিয়েছিলেন। টাকা-পয়সার লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাবিনার মাথার পেছনের দিকে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, নিহতের মরদেহ গুম করতে ব্যারেলের মধ্যে তা ঢুকিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মুখ-ম-লের শ্বশ্রু ম-িত এক ব্যক্তি গড়িয়ারপাড় থেকে ভূরঘাটাগামী বাসের ছাদে ব্যারেলটি তুলে দেয়। বাসটি ভূরঘাটা পৌঁছার পর মালিক দাবিদার কেউ ব্যারেল না নেওয়ায় বাসের শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। বাসের শ্রমিকরা ব্যারেলের মুখ খুলে এক নারীর মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয়। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার সন্ধ্যায় ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে পুলিশ মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে থানা পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, ওসি আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে মামলার তদন্তে অগ্রগতি অনেকটাই ঘটেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মূল রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি ওই নারীর হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে তৎপরতা চালাচ্ছে পুলিশ।
Leave a Reply